গ্রামীণ এলাকায় লাউ চাষ পদ্ধতি জেনে নিন

গ্রামীণ এলাকায় লাউ চাষ খুবই জনপ্রিয় একটা কৃষি কাজ৷ অনেকেই লাউ চাষ পদ্ধতি সঠিকভাবে জানেন না তাই কিছু ছোট ছোট ভুল করেন। আমাদের আজকের এই আর্টিকেলে লাউ চাষ পদ্ধতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হবে।


বাঙালির সকলের পছন্দের এবং মজাদার একটা খাবার হচ্ছে লাউ। এটা চাষ করা সহজ হলেও কিছু নিয়ম জেনে রাখা ভালো।


লাউ বিজ নির্বাচন –


এলাকার প্রাকৃতিক নিয়ম অনুযায়ী বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকমের লাউ চাষ হয়। এক্ষেত্রে আপনার এলাকায় কোন লাউ বেশি চাষ হয় তা জেনে নিতে হবে। বাজার কি ধরনের লাউয়ের চাহিদা রয়েছে তা জেনে নিতে হবে।


যেসকল লাউ বেশি চাষ হয় সেসকল লাউয়ের বিজ নির্বাচন করতে হবে। নতুন কৃষকরা সঠিক মানের লাউ বিজ রির্বাচন করতে ভুল করেন। এজন্য আজকের লেখাটি লিখতে হচ্ছে।


আকার আকৃতিতে লাউয়ের দু'টি প্রকাশ রয়েছে

  • লম্বা জাতের লাউ
  • গোলাকার জাতের লাউ


এলাকার প্রাকৃতিক অবস্থা ও মানুষের চাহিদা অনুযায়ী আপনি লম্বা আকৃতির লাউ বিজ বা গোলাকার আকৃতির লাউ বিজ নির্বাচন করতে পারেন। বেশির ভাগ জেলায় লম্বা আকৃতির লাউ বেশি জনপ্রিয়। এটাকে অনেকে চালকুমড়া বলে থাকেন।


সবুজ এই সবজি দিয়ে বিভিন্ন রকমের খাবার তৈরি করা যায়। স্বাস্থ্যের জন্য যেমন ভালো তেমনি নানা রকমের খাবার তৈরিতে অসাধারণ লাউ।

আরও পড়ুন:   বারোমাসি আম গাছের পরিচর্যা


ভাজি, তরকারি, মোরব্বা ইত্যাদি সহ অনেক রকমের খাবার করা যায় এই লাউ দিয়ে।


লাউ বিজ বপন


বিজ বপন করার জন্য ভালো আলো বাতাস আছে এমন একটা জায়গা নির্বাচন করতে হবে। লাউ গাছের জন্য আলো বাতাস খুবই প্রয়োজন। বীজ যদি অনেক পুরানো হয় তাহলে রোপণ করার আগে ১০ থেকে ১৫ মিনিট পানিতে ভিজিয়ে রাখতে হবে।


বীজ রোপণ পদ্ধতি যদি আপনার জানা না থাকে,তাহলে কষ্ট না করে কোনো নার্সারি থেকে লাউয়ের গাছ সংগ্রহ করতে পারেন। ভালো জাতের লাউ বিজ থেকে উন্নত ফলনের লাউ গাছ জন্ম হয়।


সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে লাউ বিজ বপন করার জন্য উঁচু জায়গা নির্বাচন করতে হবে। ১৫ থেকে ২৫ সেন্টিমিটার উঁচু জায়গায় বিজ বপন করা ভালো।


লাউ বীজ রোপণ করার পরে পরিচর্যা


চাল কুমড়োর জন্য রোদের আলো বেশি প্রয়োজন হয়। রোদের আলো পাওয়ার জন্য দিনের বেলায় মাটির উপর কোনো ছাউনি দিবেন না। রাতের বেলায় অবশ্যই মাটির উপরে কিছু খড়ের গুড়ো দিয়ে দিবেন। এতে বীজ গুলো ভালো শক্তি পাবে এবং ভালো করে গজিয়ে উঠেবে।


উপযুক্ত জায়গায় লাউ চারাগাছ রোপণ


এঁটেল ও দো-আঁশ মাটি লাউ চাষের জন্য ভালো। চাষের জন্যে যেন একটা উপযুক্ত জায়গা পেয়ে যান তার জন্য সময় নিয়ে খোঁজ করেন। চাষ করার পরে এঁটেল মাটির খোঁজ করলে হবেনা। কাজের জন্য প্রথমেই এঁটেল দো-আঁশ বেছে নিন।


বাংলাদেশে কৃষকরা শীতকালে লাউ চাষ করে থাকেন। এখান থেকে জানা যায় মানুষ শীতকালে লাউ পছন্দ করেন। শুধু তাই নয়। বেশি ঠান্ডা ও বেশি গরম আবহাওয়া লাউ চাষের জন্যে উপযুক্ত নয়। এজন্য বাংলাদেশে শীতকালীন সবজি হিসেবে লাউ চাষ করা হয়। কারণ শীতের সময় রাতে ঠান্ডা ও দিনের বেলায় সূর্যের আলো পাওয়া যায়।

আরও পড়ুন:   ড্রাগন ফল চাষ পদ্ধতি ও ড্রাগন ফল এর উপকারিতা


লাউয়ের ফলন বৃদ্ধির জন্য সার প্রয়োগ


এই সুন্দর লাউ চাষ করার জন্য বাংলাদেশের আবহাওয়া অনুযায়ী বেশ উপযুক্ত। এজন্য গোবর ও ভিটামিন যুক্ত মাটি ছাড়া অন্য কোনো সার ব্যবহার করার প্রয়োজন হয় না। তবে আশানুরূপ ফলনের জন্য আপনি লাউ চাষে সঠিক পরিচর্যা ও সার ব্যবহার করুন।


বেশি ফলন বৃদ্ধির জন্য মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে। সঠিকভাবে পানি দেওয়া ও মাটির মধ্যে গোবর সার দেওয়ার মাধ্যমে লাউ গাছের গোড়ায় মাটির আর্দ্রতা ধরে রাখা যাবে। সময়ে সময়ে গাছের গোড়ার মাটি নাড়াচাড়া করে মাটি উঠিয়ে দিতে হবে।


লাউ গাছের নিচে যেসকল ছোট ছোট ডগা বের হয় সেগুলো ছোট থাকতে কেটে দিতে হবে। এই ডগা গুলো লাউ গাছকে বৃদ্ধি পেতে বাঁধা দেয়। এজন্য আগাছা পরিস্কারের মতো ডগার শাখা গুলো কেটে দিবেন।

মন্তব্য করুন